বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৪১ অপরাহ্ন
কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি::
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে মসজিদের অনুদানের টাকা আত্মসাতের বিষয়টি ফাঁস করে দেওয়ায় স্থানীয় এক নারী ইউপি সদস্যকে টানা-হেচড়া ও পিটিয়ে জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় তার ছোট ছেলেকেও পিটিয়ে আহত করা হয়। এ ঘটনায় গত রোববার বিকেলে কালিয়াকৈর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
আহতরা হলেন- কালিয়াকৈর উপজেলার টেকিবাড়ী চানপুর এলাকায় বাবর আলী খানের স্ত্রী ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মোছাঃ নুরুন্নাহার (৫২) ও তার ছোট ছেলে ইকরাম খান (১৭)।
এলাকাবাসী ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মোছাঃ নুরুন্নাহার কালিয়াকৈর উপজেলার সুত্রাপুর ইউনিয়নের ৭, ৮, ৯নং ওয়ার্ডের নারী ইউপি সদস্য। এ সুবাধে তিনি গত দুই বছর আগে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মহোদয়ের মাধ্যমে টেকিবাড়ী চানপুর জামে মসজিদের ১ লাখ টাকা অনুদানের ব্যবস্থা করেন। ওই সময় মসজিদের ইমাম প্রভাবশালী গোলাম সারোয়ার হোসেন ওই অনুদানের টাকা গ্রহণ করেন। কিন্তু তিনি কৌশলে উক্ত অনুদানের টাকা মসজিদের কোষাঘারে জমা না দিয়ে আত্বসাত করে। পরে মসজিদের অনুদানের টাকার বিষয়টি ইউপি সদস্য নুরুন্নাহার স্থানীয় লোকজনকে জানিয়ে দিলে তার উপর ক্ষিপ্ত হন গোলাম সারোয়ার। অনুদানের টাকা আত্বাসাতের বিষয়টি জানাজানি হলে ওই ইমামকে মসজিদ থেকে অব্যাহতি দেয় এলাকাবাসী। চাকরি থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর থেকে গোলাম সারোয়ার ওই মহিলা মেম্বারের উপর বিভিন্ন ভাবে শত্রুতা করে আসছে।
এছাড়াও বিভিন্ন সময় নানা অসামাজিক কথা-বার্তা বলে জনসম্মুখে তাকে হেয়প্রন্ন করার চেষ্টাও চালিয়ে আসছে। এর জের ধরে গত শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গোলাম সারোয়ার টানা-হেচড়া করে দোকান থেকে বাইরে বের করে। পরে লাঠি দিয়ে এলোপাথারি পিটিয়ে তাকে জখম করে এবং গলায় থাকা এক ভরি ওজনের স্বর্নেও চেইন কেড়ে নেয়। এ সময় মাকে বাচাতে তার ছোট ছেলে ইকরাম খান এগিয়ে গেলে তাকেও পিটিয়ে জখম করে। এসময় ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে গেলে তাদের খুন জখমের হুমকি দিয়ে তিনি চলে যান। পরে আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে কালিয়াকৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে এলাকাবাসী। এ ঘটনায় ইউপি সদস্য নুরুন্নাহার বাদী হয়ে ওই ইমাম সারোয়ারকে আসামী করে পরের দিন রোববার বিকেলে কালিয়াকৈর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
ওই ইউপি সদস্য মোছাঃ নুরুন্নাহার জানান, মসজিদের অনুদানের টাকা আত্মসাতের বিসয়টি সবাইকে জানিয়ে দিলে তিনি আমার সঙ্গে শত্রুতা শুরু করে। এর জেরে আমার দোকানে ঢুকে আমাকে টানা-হেচড়া করে এবং লাঠি দিয়ে মারধর করে। এসময় আমার ছেলে আমাকে বাচাতে এলে তাকেও মারধর করা হয়। এছাড়া তিনি আমাকে হেয়ু করার জন্য মাঝে মাঝে রাতের বেলায় বিভিন্ন মোবাইল নাম্বার থেকে ফোন দিয়ে অসামাজিক প্রস্তাবও দেয়।
অভিযুক্ত গোলাম সারোয়ার জানান, আমি তাকে মারধর করেনি, উল্টো তিনি আমাকে মারধর করেছে।
কালিয়াকৈর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মুক্তি মাহমুদ জানান, এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।